রোববার, ২ জুন ২০২৪
কৃষ্ণা দেবনাথের সাক্ষাৎকার

অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে আইনজীবী ও বিচারকদের সম্পর্ক 

কৃষ্ণা দেবনাথ। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড
২৯ মার্চ, ২০২৩ ১৬:১২
আব্দুল জাব্বার খান
প্রকাশিত
আব্দুল জাব্বার খান
প্রকাশিত : ২৯ মার্চ, ২০২৩ ০৮:১০

বিচারপতি কৃষ্ণা দেবনাথ ১৯৮১ সালের ৮ ডিসেম্বর মাত্র ২৬ বছর বয়সে মুনসেফ (সহকারী জজ) হিসেবে বিচারিক জীবন শুরু করেন। তারপর চার দশকের বিচারিক কর্মজীবন পার করে ২০২২ সালের ৯ জানুয়ারি আপিল বিভাগের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন। এরপর ওই বছরের ৯ অক্টোবর তিনি আনুষ্ঠানিক বিচারিক কাজ থেকে অবসরে যান। সম্প্রতি তিনি দৈনিক বাংলার জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক আব্দুল জাব্বার খানকে দেয়া একান্ত সাক্ষাৎকারে শোনালেন তার ৪১ বছরের বিচারিক জীবনের কথা।

দৈনিক বাংলা: অবসরকালীন জীবন কেমন কাটছে?

কৃষ্ণা দেবনাথ: ভালোই কাটছে। তবে ব্যস্ততা কমেনি। মনে হয় আরও বাড়ছে। অবসরে অবসর কোথায়? হা হা…

দৈনিক বাংলা: স্বাধীন বাংলাদেশের তৃতীয় কোনো নারী বিচারক হিসেবে বিচার বিভাগে যাত্রা শুরুর পর সর্বোচ্চ আদালত থেকে অবসরে গেলেন। সব মিলিয়ে একজন নারীর বিচারক হিসেবে দীর্ঘ এই পথচলা কতটা সহজ ছিল?

কৃষ্ণা দেবনাথ: দেশ স্বাধীনের পরে ১৯৭২ সালে যখন বাংলাদেশের বিচার বিভাগের যাত্রা শুরু হয়, তখনই কিন্তু বাংলাদেশে মেয়েরা জুডিশিয়াল সার্ভিসে আসতে পারেনি। নারীদের জন্য জুডিশিয়াল সার্ভিসে যাত্রা শুরু হয় ১৯৭৫ সালে। প্রথমেই আমরা পুরুষদের থেকে তিন বছর পিছিয়ে যাই। দেশের বিচার বিভাগের যাত্রা শুরুর তিন বছর পরে নারীদের যাত্রার পরও আজকে নারীদের অবস্থান কোথায় সেটা দেখতে হবে। আমি নারী বিচারক হিসেবে যাত্রা শুরু করেছি ১৯৮১ সালে। প্রথম এসেছিলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, দ্বিতীয় যাত্রা শুরু করেছিলেন বিচারপতি জিনাত আরা। আর তৃতীয় হিসেবে যুক্ত হই আমি। সৌভাগ্যের ব্যাপার হলো, আমরা তিনজনই আপিল বিভাগ থেকে অবসরে গিয়েছি। এটা ভাবতে ভালো লাগে।

নারী হিসেবে বিচারিক জীবনের তেমন কোনো সমস্যার সৃষ্টি হয়নি। তবে নারী বিচারকদের প্রধান প্রতিবন্ধকতা হয়, তাদের সাংসারিক জীবন নিয়ে। কেননা, এটা বদলির চাকরি। এক জেলা থেকে আরেক জেলায় বদলির কারণে সংসারটা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এটা অনেক কষ্টসাধ্য। এ ছাড়া বেশ কিছু তিক্ত অভিজ্ঞতা তো ছিলই।

দৈনিক বাংলা: সর্বোচ্চ আদালতের বিচারক হবেন এমন স্বপ্ন কি বিচারিক জীবনের শুরুতে কখনো দেখেছিলেন?

কৃষ্ণা দেবনাথ: না, এমনটি কখনোই ভাবিনি। এমনকি হাইকোর্টেও থাকাকালীন ভাবিনি যে আমি আপিল বিভাগে যাব। স্বপ্নও ছিল না। তবে আমার স্বপ্ন ছিল আমি জজ হব।

দৈনিক বাংলা: অনেক খ্যাতিসম্পন্ন আইনজীবীরাই এখন প্রায় বেঁচে নেই, আপনি কি মনে করেন এখন নতুন যারা আসছেন, তারা সেই খ্যাতিম্যান আইনজীবীদের যোগ্য উত্তরসূরি হিসেবে গড়ে উঠছেন?

কৃষ্ণা দেবনাথ: দেখেন এটা শুধু আইনজীবীদের মধ্যে নয়, শিক্ষা, চিকিৎসা সব ক্ষেত্রেই একই অবস্থা। সবখানেই অবক্ষয়। ধরেন আমার বাবা যে পরিমাণ লেখাপড়া করে জ্ঞান অর্জন করেছেন আমি তো মনি করি না, আমার সেটুকু আছে। কিন্তু আমি আশাবাদী নতুন প্রজন্ম থেকে অনেক ট্যালেন্ট উঠে আসছে, আসবে। একসময় নামকরা আইনজীবীরা ছিলেন। তারপর তাদের উত্তরসূরিরা এসেছেন। ঠিক এমনি করেই নতুনরা আইনজীবী হয়ে উঠবেন। এখন যারা নবীন আইনজীবী তাদের জন্য একজন ভালো আইনজীবী হিসেবে গড়ে ওঠার এটা মোক্ষম সময়। তার কারণ জায়গাটা এখন অনেক খালি, সবকিছু প্রস্তুত হয়ে আছে, এখন দরকার শুধু অধ্যবসায়ের।

দৈনিক বাংলা: আপনার অবসর জীবনের শেষ দিনে বলেছিলেন, বিচারক নিজেকে স্বাধীন মনে না করলে সুবিচার সম্ভব না। এর মানে আপনি কী বুঝিয়েছেন?

কৃষ্ণা দেবনাথ: এই বাক্যটি আমি শুধু কথার কথা হিসেবে বলিনি। আমি মনেপ্রাণে বিশ্বাস করেই বলেছি। এখনো বিশ্বাস করি, একজন বিচারক নিজেকে যদি স্বাধীন মনে না করেন, তাহলে কাগজে-কলমে স্বাধীনতা দিয়েই কী লাভ। একজন বিচারক নিজের বিবেককে প্রশ্ন করবেন তিনি নিজে স্বাধীন কি না। কাগজে-কলমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা বলা হয়েছে মাত্র কিছু বছর আগে। তার আগে আমরা বিচারকরা তো নিজেদের পরাধীন মনে করিনি, বিচারের কাজটি কিন্তু স্বাধীনভাবেই করেছি।

আমি মনে করি, একজন বিচারক মনেপ্রাণে নিজেকে স্বাধীন মনে করেন কি না, সেটাই বড় কথা। আমি জোর গলায়, দ্ব্যর্থহীনভাবে বলি ৪১ বছরে দেশের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন পদে বিচারক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছি। এই সময়ে তো আমার কাছে কোনো তদবির আসেনি। নিজেকেই সেই জায়গা তৈরি করে নিতে হবে। আমি যখন বিচারকের দায়িত্ব পালন করেছি, তখন অনেক জুনিয়র বিচারক বলতেন তদবির আসে। আমি তখন তাদের বলেছি, কই আমার কাছে তো কোনো তদবির আসে না। তদবির যাতে না আসে সেই পরিবেশ আপনার নিজেকেই তৈরি করে নিতে হবে। বিচারকের স্বাধীনতার বিষয়টি নিজের সততা দিয়ে তৈরি করে নিতে হয়।

তদবির না শুনে একবার এক ব্যক্তিকে জামিন দিইনি বলে সেই সময় আমাকে মেহেরপুরের জেলা জজ থেকেও বদলি করা হয়েছিল। জেলা জজ থেকে সাড়ে চার বছর আমাকে কর্নার করে রাখা হয়েছিল। দুটি জেলার জেলা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালনের পর স্পেশাল জজ করে রাখা হয়েছিল। আমি তো তখনো ভয় পাইনি। আমার কথা হলো, নিজেকে স্বাধীন রাখতে হলে বদলির ভয় করলে চলবে না। কী আর করবে বাংলাদেশের ভেতরেই তো বদলি করবে, আর তো কিছু না। বিচারক যদি বদলির ভয় বা নিজের লাভ-ক্ষতির চিন্তা করেন তাহলে তিনি স্বাধীন বিচারক হিসেবে কীভাবে কাজ করবেন। করতে পারবেন না। বিচারককে তার নিজের সততার ওপর শক্ত অবস্থানে থাকতে হবে। এখন কিন্তু দেওয়ানি মামলায় আপস করার সুযোগ আছে। লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে মামলা আপসের সুযোগ আছে। এখন যদি এটা ভালোভাবে কার্যকর হয়, তাহলে ৫০ শতাংশ মামলাই আসবে না। এটা যদি সফল করা যায়, তাহলে মামলার জট অনেক কমে আসবে।

দৈনিক বাংলা: একটি মামলা শেষ করতে বছরের পর বছর লাগে কেন?

কৃষ্ণা দেবনাথ: মামলা শেষ করতে পক্ষগণেরই জোরালো পদক্ষেপের প্রয়োজন। কিন্তু সমস্যা হলো, অনেক সময় কোনো না কোনো পক্ষই চায় না, দ্রুত মামলা শেষ হোক। মামলার জট সৃষ্টির পেছনে বিভিন্ন কারণ রয়েছে। এর জন্য শুধু বিচারকরা দায়ী তা বলা যাবে না বরং বাদী-বিবাদী, দুই পক্ষের আইনজীবীদেরও দায় রয়েছে। একটি মামলার নিষ্পত্তির জন্য কম করে হলেও পাঁচটি পক্ষের সমন্বয় দরকার পড়ে, তবেই মামলার নিষ্পত্তি ঘটে।

এ ছাড়া বিচারকসংকট রয়েছে বড় আকারে। এত বিশাল মামলার জট দ্রুত কমাতে হলে বিপুলসংখ্যক বিচারক নিয়োগ দিতে হবে। যেটা সরকারের পক্ষে সম্ভব না।

দৈনিক বাংলা: বর্তমানে দেখা যাচ্ছে ছোটখাটো যেকোনো বিষয়েই হাইকোর্টের দ্বারস্থ হতে হচ্ছে, কেন?

কৃষ্ণা দেবনাথ: এখন কিন্তু পত্রিকা খুললেই দেখা যায় হাইকোর্টের বিভিন্ন সংবাদ বা নির্দেশনা নিয়ে খবর ছাপানো হয়েছে। চোখ মেললেই কোর্ট-কাচারির খবর পাওয়া যায়। এর কারণ হচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন সময়মতো পদক্ষেপ না নেয়ায় ভুক্তভোগীকে হাইকোর্টে আসতে হচ্ছে। এটার একটা ভালো দিক আছে, মানুষ আদালতে এলে প্রতিকার পায়। আবার কিছু সময় দেখি একটা সাধারণ বিষয় নিয়েও মানুষকে হাইকোর্টে আসতে হয়। স্থানীয় প্রশাসন যদি সঠিক সময়ে সঠিক কাজটা করে তাহলে কিন্তু আদালতের ওপর এই চাপ আসে না। তারা সেটি করছে না। অনেক সময় আদালতের নির্দেশের পরও অনেক কিছু বাস্তবায়ন করা হয় না। এটা ভালো দিক না।

দৈনিক বাংলা: বিচার বিভাগকে কি আরও শক্তিশালী হতে হবে, নাকি শক্তিশালীই আছে?

কৃষ্ণা দেবনাথ: বিচার বিভাগকে কেউ শক্তিশালী করে দেবে না। বিচার বিভাগকে নিজেকেই শক্তিশালী হতে হবে। একটা আদেশ হওয়ার পর ঝড়ঝাপটা আসতে পারে। সেটা বহন করার মতো বিচারক যদি আমরা হতে পারি তাহলে বিচার বিভাগ শক্তিশালী হবে। বিচারক যদি সেই ঝড়ঝাপটা সইবার ক্ষমতা না রাখেন তাহলে সেটা হবে না।

দৈনিক বাংলা: বার ও বেঞ্চের সম্পর্ককে বলা হয় একটি পাখির দুটি ডানা। সম্প্রতি বিভিন্ন বারে আইনজীবী ও বিচারকদের সম্পর্কে টানাপোড়েন চলছে, এটিকে আপনি কীভাবে দেখছেন?

কৃষ্ণা দেবনাথ: সর্বজনীনভাবে আমি বলব, সাবলীল সম্পর্ক হ্রাস পেয়েছে। অনেক আগে থেকেই এই সম্পর্ক নষ্ট হয়েছে। অনেক সময় বিচারকের দরজায় লাথি দেয়ার ঘটনাও ঘটেছে। সার্বিকভাবে বলব আইনজীবী ও বিচারকদের মধ্যে সম্পর্ক অসহিষ্ণু হয়ে উঠেছে। আমার বক্তব্য হলো, একজন বিচারক যেহেতু একটু ওপরে বসেন, আইনজীবীরা একটু নিচে দাঁড়ান, এই যে বিচারকরা একটু অগ্রাধিকার স্থানে থাকেন সে জন্য বিচারকদের অনেক কিছু করা যায়, অনেক কিছু করা যায় না। সেটি তাদের মাথায় থাকতে হবে। এ ছাড়া আইনজীবীদেরও সহিষ্ণু হতে হবে। দুপক্ষই যদি সহিষ্ণু হয় তাহলে কিন্তু সম্পর্কের মধ্যে চিড় ধরবে না।

আদালতের মর্যাদা কমলে কিন্তু আইনজীবীদেরই মর্যাদা কমবে। এটা তাদের বুঝতে হবে। কোনো বিচারকের ভুল হলে আইনজীবীরা তার ওপরের বিচারককে বলতে পারেন। সুপ্রিম কোর্ট আছে, আইন মন্ত্রণালয় আছে। সেখানে বলার সুযোগ আছে। কিন্তু তাই বলে স্লোগান দেয়া উচিত না। এ ব্যাপারে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার সময় এসেছে বলে তিনি মনে করেন।

দৈনিক বাংলা: দীর্ঘ ৪১ বছরের বিচারিক জীবনে পূরণীয় ঘটনা বা অপ্রাপ্তি বলে কিছু আছে কি না?

কৃষ্ণা দেবনাথ: মানিকগঞ্জে একটি অ্যাসিড নিক্ষেপ মামলায় আসামিকে সাজা দিতে পারিনি, এই একটি বিষয় আমার মনে এখনো গেঁথে আছে। আইনজীবীর ভুলের কারণে সেই আসামিকে সাজা দিতে পারিনি। যে কারণে খুব কষ্ট লেগেছিল। কারণ মামলায় আসামি শনাক্ত একটা বড় ব্যাপার। মামলায় বলা হয়েছে, চাঁদের আলোতে আসামিকে দেখা গেছে। কিন্তু পঞ্জিকাতে দেখা গেল সেদিন অমাবস্যা ছিল। তার ওপর আবার সেদিন ওই এলাকায় বিদ্যুৎ ছিল না। আইনজীবী মামলা শক্ত করতে গিয়ে চাঁদের আলোতে দেখেছে বলে বিবরণ দিয়েছেন কিন্তু সেদিন সেটা ছিল না। যে কারণে আসামি শনাক্ত কঠিন হয়ে পড়ে। অতিরঞ্জিত বিবরণ মূল ঘটনাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। অথচ ছেলেটি মেয়েটিকে স্কুলে যাওয়ার সময় উত্ত্যক্ত করত, সেটি উল্লেখ থাকলেও হতো। অতিরঞ্জিত করার কারণে আসামি বেঁচে যায়। এই ঘটনা আমাকে পীড়া দেয়। তার কারণ চোখের সামনে দেখেছিলাম মেয়েটির ঝলসানো মুখ। কিন্তু তার ন্যায়বিচার আমি দিতে পারিনি।

দৈনিক বাংলা: দীর্ঘ ৪১ বছরের বিচারিক জীবনে আপনি কতজন আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের সাজা দিয়েছেন?

কৃষ্ণা দেবনাথ: এটা বলতে পারব না। তার কারণ, আমি গুনে রাখিনি। তবে সর্বোচ্চ সাজা দেয়ার ব্যাপারে আমি অনেক সতর্ক ছিলাম। আমি দুইয়ে দুইয়ে চার না হওয়া পর্যন্ত কাউকে সাজা দিইনি। অনেক আসামিকে সর্বোচ্চ সাজা দিয়েও আমি স্বস্তি পেয়েছি। তার কারণ অকাট্য দলিল-প্রমাণ ছিল। সব থেকে বড় স্বস্তি পেয়েছি, যখন আমি ঢাকার জেলা জজ ছিলাম। বঙ্গবন্ধু হত্যার ফাঁসির আসামিদের সাজা কার্যকর হবে। তখন ফাঁসির আদেশ কার্যকর করার জন্য শেষ যে স্বাক্ষর দিতে হয়, জেলা জজ হিসেবে সেটা আমি দিয়েছিলাম। ওই দিন রাত সাড়ে ১১টার দিকে আমার কাছে লাল নথি এল, আমি তাতে স্বাক্ষর করলাম। এরপরই টিভিতে দেখলাম কারা কর্তৃপক্ষ ফাঁসি কার্যকর শুরু করেছে। ঐতিহাসিক সেই মামলাটিতে শেষ স্বাক্ষর করেছিলাম। এটা আমাকে অনুপ্রাণিত করে।

দৈনিক বাংলা: অবসরে কেমন কাটছে?

কৃষ্ণা দেবনাথ: অবসরে একদমই অবসর নেই। আমি রুট (প্রান্তিক) লেভেলের ভিকটিমদের নিয়ে কাজ করতে চাই। সেটাই শুরু করেছি। দেখা যাক কতটা করতে পারি।

দৈনিক বাংলা: ধন্যবাদ আপনাকে।

কৃষ্ণা দেবনাথ: আপনাকেও ধন্যবাদ।


বাংলাদেশকে আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ফাইল ছবি
আপডেটেড ২ জুন, ২০২৪ ১৩:০৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

‘বাংলাদেশকে আর কেউ পেছনে টানতে পারবে না। ১৫ আগস্টের পর আমাদের যেভাবে ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত করা হয়েছে আর যেন কেউ এটা না করতে পারে কেউ সেজন্য আমাদের সবসময় সজাগ থাকতে হবে। দেশটাকে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে।’

আজ রোববার গণভবনে ‘আমার চোখে বঙ্গবন্ধু’ শীর্ষক এক মিনিটের ভিডিও নির্মাণ প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচিতদের সম্মাননাপত্র, ক্রেস্ট ও আর্থিক পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘কোন দেশের সঙ্গে কোন দেশের ঝগড়া সেটা আমার দেখার দরকার নেই। নিজের দেশের উন্নয়নটা আমার আগে দরকার। উন্নয়নে যারা সহযোগিতা করবে আমি তাদের নিয়েই চলবো। সেভাবে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা সবসময় শান্তি চাই, যুদ্ধ চাই না। সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব চাই এবং সেই বন্ধুত্ব রেখেই কিন্তু আমি এগিয়ে যাচ্ছি।’

নতুন প্রজন্মকে ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিয়ে ভবিষ্যতের জন্য নিজেদের তৈরি করতে হবে। এখন যুগ হচ্ছে প্রযুক্তির যুগ, বিজ্ঞানের যুগ, জ্ঞানের যুগ। আমাদের ছেলেমেয়েদের বলবো লেখাপড়া ছাড়া, জ্ঞান অর্জন ছাড়া, নিজেকেও তৈরি করতে পারবো, দেশকেও তৈরি করতে পারবো না।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাদের ছোট্ট সোনামনি, আমাদের নতুন প্রজন্ম তোমরাই একদিন এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। কিন্তু সেটা করতে হলে একটা আদর্শ লাগে। ইতিহাস থেকে আমাদের শিক্ষা নিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘আগামী দিনের পথ চলা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে, আমরা যেন আরও সুন্দর ভাবে বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। সেভাবেই কিন্তু নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। শিক্ষা ছাড়া কখনো এটা সম্ভব না। শিক্ষা ছাড়া কোনোদিন একটা জাতিকে দারিদ্র্য মুক্ত করা যায় না। শিক্ষাই হচ্ছে সব থেকে বড় অর্জন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তোমাদেরকে তৈরি হতে হবে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাটা যেন নষ্ট না হয়। বাংলাদেশ ক্ষুধা-দারিদ্র্য মুক্ত, উন্নত বাংলাদেশ গড়ে উঠবে। তোমাদেরকেই গড়ে তুলতে হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কারো কাছে হাত পেতে চলবো না। নিজের মর্যাদা নিয়ে চলবো। আত্ম মর্যাদাবোধ নিয়ে চলবো, এটাই আমাদের মাথায় সব সময় রাখতে হবে। একটা কথা মনে রাখবে যে ভিক্ষুক জাতির কোনো ইজ্জত থাকে না। ১৯৭৫ সালের আমরা কিন্তু ভিক্ষুক জাতিতে পরিণত হয়েছিলাম।’

সঠিক ইতিহাস জানা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছিল আজকে সেই ইতিহাস বিকৃতি আস্তে আস্তে মুছে গেছে। এখন সঠিক তথ্যটা চলে এসেছে।

এর আগে প্রধানমন্ত্রী প্রতিযোগিতায় জাতীয় পর্যায়ে নির্বাচিতদের হাতে সম্মাননাপত্র, ক্রেস্ট এবং আর্থিক পুরস্কার তুলে দেন।


আজ থেকে ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু

১২ জুন চালু হচ্ছে ‘কক্সবাজার ঈদ স্পেশাল’
চবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২ জুন, ২০২৪ ০০:২০
নিজস্ব প্রতিবেদক

পবিত্র ঈদুল আজহার ট্রেনের অগ্রিম টিকিট বিক্রি আজ রোববার থেকে শুরু হচ্ছে। এর আগে গত ২৮ মে রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম টিকিট বিক্রির বিষয়টি ঘোষণা করেছেন। সে সময় তিনি বলেছিলেন, শতভাগ টিকিট অনলাইনে বিক্রির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আগামী ১৭ জুনকে ঈদের দিন ধরে ২ জুন আন্তনগর ট্রেনের অগ্রিম ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হবে। এবার দুই সময়ে ট্রেনের আসন বিক্রি করা হবে। পশ্চিমাঞ্চলের আসন বিক্রি শুরু হবে সকাল ৮টা থেকে আর পূর্বাঞ্চলের আসন বিক্রি শুরু হবে দুপুর ২টা থেকে। রেলওয়ের ওয়েবসাইট থেকে সহজেই যাত্রীরা এ আসন সংগ্রহ করতে পারবেন। সে ক্ষেত্রে রেলওয়ের ওয়েবসাইটে একবার রেজিস্ট্রেশন করলেই চলবে।

যেভাবে করতে হবে রেজিস্ট্রেশন

রেলওয়ের ওয়েবসাইটে (https://eticket.railway.gov.bd) প্রবেশ করতে হবে। এরপর ওয়েবসাইটের ওপরে থাকা রেজিস্ট্রেশন ট্যাবে ক্লিক করতে হবে। এতে রেজিস্ট্রেশনের জন্য নতুন একটি পেজ আসবে। এ পেজে মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর ও জন্ম তারিখ দিয়ে I'm not a robot বক্সে ক্লিক করতে হবে। তারপর ভেরিফাই বাটনে ক্লিক করতে হবে। তখন মোবাইল নম্বরে একটি ওটিপি চলে আসবে। সব তথ্য ঠিক থাকলে রেজিস্ট্রেশন সফল হবে এবং বাংলাদেশ রেলওয়ে নামে নতুন একটি পেজ আসবে। এখানে ইউজার অটো লগইন হয়ে যাবে। এবারও প্রথমে রেলওয়ের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করতে হবে। লগইন না হয়ে থাকলে আবার লগইন বাটনে ক্লিক করতে হবে। এরপর যে পেজ আসবে তাতে কাঙ্ক্ষিত ভ্রমণ তারিখ, প্রারম্ভিক স্টেশন, গন্তব্য স্টেশন, শ্রেণি পূরণ করে ফাইন্ড টিকিট বাটনে ক্লিক করতে হবে।

ট্রেন অনুযায়ী ভিউ সিটস বাটনে ক্লিক করে আসন খালি থাকা সাপেক্ষে পছন্দের আসন সিলেক্ট করে কন্টিনিউ পারচেজে ক্লিক করতে হবে। ভিসা, মাস্টার কার্ড কিংবা বিকাশে পেমেন্ট করলে একটি ই-টিকিট অটো ডাউনলোড হবে। পাশাপাশি যাত্রীর ই-মেইলে টিকিটের কপি চলে যাবে। এদিকে ঈদুল আজহা উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের ট্রেন যাত্রার সুবিধার্থে ১০ জোড়া ঈদ স্পেশাল ট্রেন চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এর মধ্যে এক জোড়া চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটের ‘কক্সবাজার ঈদ স্পেশাল’ ট্রেন। সম্প্রতি ঈদুল আজহা উপলক্ষে বাংলাদেশ রেলওয়ের নেওয়া কর্মপরিকল্পনা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। কর্মপরিকল্পনায় বলা হয়, ঈদুল আজহায় চাঁদপুর ঈদ স্পেশাল (১, ২, ৩ ও ৪) চট্টগ্রাম-চাঁদপুর-চট্টগ্রাম, দেওয়ানগঞ্জ ঈদ স্পেশাল (৫ ও ৬) ঢাকা-দেওয়ানগঞ্জ-ঢাকা, ময়মনসিংহ ঈদ স্পেশাল (৭ ও ৮) চট্টগ্রাম-ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ঈদ স্পেশাল (৮ ও ৯) চট্টগ্রাম-কক্সবাজার-চট্টগ্রাম রুটে ১২ জুন থেকে ঈদের আগের দিন পর্যন্ত এবং ঈদের পর মিলিয়ে মোট ১৪ দিন চলাচল করবে। এ ছাড়া পার্বতীপুর ঈদ স্পেশাল (১৫ ও ১৬) জয়দেবপুর-পার্বতীপুর-জয়দেবপুর রুটে আগামী ১৩ থেকে ১৫ জুন এবং ঈদের পর ২১ থেকে ২৩ জুন চলাচল করবে। অন্যদিকে শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল (১১ ও ১২) ভৈরব বাজার-কিশোরগঞ্জ-ভৈরব বাজার, শোলাকিয়া ঈদ স্পেশাল (১৩ ও ১৪) ময়মনসিংহ-কিশোরগঞ্জ-ময়মনসিংহ, গোর-এ-শহীদ ঈদ স্পেশাল (১৭ ও ১৮) পার্বতীপুর-দিনাজপুর-পার্বতীপুর, গোর-এ-শহীদ ঈদ স্পেশাল (১৯ ও ২০) ঠাকুরগাঁও-দিনাজপুর-ঠাকুরগাঁও রুটে শুধু ঈদের দিন চলাচল করবে।

এদিকে গত ঈদুল ফিতরে চালু হওয়া কক্সবাজার ঈদ স্পেশাল ট্রেন ঈদের আগে-পরে মোট ১৪ দিন চলার কথা থাকলেও যাত্রীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে কয়েক দফায় সময় বাড়িয়ে ট্রেনটি আগামী ১০ জুন পর্যন্ত চালুর কথা ছিল; কিন্তু যান্ত্রিক বিভাগ থেকে ইঞ্জিন ও লোকো মাস্টারের সংকটের কথা জানিয়ে ওই ট্রেন চলাচল ৩০ মে থেকে বাতিল হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে ওই পথের যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চার হয়। এ বিষয়ে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক মোহাম্মদ নাজমুল ইসলাম বলেন, ‘কক্সবাজার স্পেশাল ট্রেন নিয়মিত কোনো ট্রেন নয়। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ১২ জুন থেকে এটি চালু হবে। এরপর ১০-১২ দিন চলাচল করে আবার বন্ধ হয়ে যাবে। স্পেশাল ট্রেন মানে যেকোনো সময় চলবে, তারপর আবার বন্ধ হবে।’


৮ বিভাগেই বৃষ্টির আভাস

মৌসুমি বায়ু বিস্তার লাভ করায় আসছে বর্ষা
ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ২ জুন, ২০২৪ ০০:২২
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানার পর গত সোমবারের (২৭ মে) পর থেকে ঢাকাসহ সারা দেশে বেশ ভ্যাপসা গরম অনুভূত হচ্ছে। ফলে এই গরমে জনমনে বেশ অস্বস্তি দেখা যাচ্ছে। গতকাল শনিবারও তীব্র দাবদাহ প্রবাহিত হয়। থেকে থেকে মেঘের লুকোচুরি থাকলেও অস্বস্তিকর ভ্যাপসা গরম কোনোভাবেই মুক্তি দেয়নি মানুষদের। এতে করে কাজের জন্য বের হওয়া মানুষকে বেশ ঘামতে দেখা যাচ্ছে। এতে যারা কর্মজীবী মানুষ রয়েছেন তাদের কষ্ট হচ্ছে বেশি।

তবে চলতি বছরের এপ্রিল মাস থেকে গত মে মাসে সারা দেশে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও ভ্যাপসা গরম মানুষকে বেশ অস্বস্তি দিচ্ছে। বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকায় এই ভ্যাপসা গরমের মাত্রা যেন একটু বেশিই অনুভূত হচ্ছে। ঘরে-বাইরে সবখানেই বিরাজ করে অস্বস্তিকর পরিস্থিতি।

দেশের ১৬টি জেলার ওপর দিয়ে মৃদু তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। এর মধ্যে কিছু কিছু জায়গায় আজ রোববার তাপপ্রবাহ প্রশমিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে গতকাল আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে।

তাপপ্রবাহ চলমান জেলাগুলো হচ্ছে- ঢাকা, টাঙ্গাইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, রাজশাহী, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, মৌলভীবাজার, চাঁদপুর, নোয়াখালী, বাগেরহাট, যশোর, বরিশাল, পটুয়াখালী ও ভোলা।

এদিকে দেশের ৮ বিভাগেই বৃষ্টির আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অফিস। আর সারা দেশে দিনের তাপমাত্রা সামান্য হ্রাস পেতে পারে এবং রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টার আবহাওয়ার পূর্বাভাসে আরও বলা হয়েছে, সারা দেশে বিস্তার লাভ করছে মৌসুমি বায়ু। এটি দেশের সাত বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ বজলুর রশিদ গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ‘মৌসুমি বায়ু এখন কিছুটা দুর্বল, তাই সারা দেশে হালকা বৃষ্টির ধারণা করা হচ্ছে। এর পাশাপাশি গরমও কিন্তু থাকবে। তবে এক সপ্তাহ বা তারও কিছু সময় পর মৌসুমি বায়ু আরও সক্রিয় হলে বৃষ্টি বাড়বে। তখন গরম কিছুটা কমবে।’

আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু আরও অগ্রসর হওয়ার জন্য পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে।

এদিকে আট বিভাগেই বৃষ্টির সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায়, রাজশাহী, খুলনা ও চট্টগ্রাম বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং ঢাকা ও বরিশাল বিভাগের দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি/বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে, সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে।

গতকালের আবহাওয়ার বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, লঘুচাপের বাড়তি অংশ ভারতের পশ্চিমবঙ্গ থেকে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল হয়ে উত্তর-পশ্চিম বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এ ছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু ঢাকা, বরিশাল, চট্টগ্রাম, সিলেট, ময়মনসিংহ, রংপুর এবং রাজশাহী বিভাগ পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে। দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু আরও অগ্রসর হওয়ার জন্য পরিস্থিতি অনুকূল রয়েছে।

অন্যদিকে বর্ষার বার্তা নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে দেশে প্রবেশ করছে মৌসুমি বায়ু। তবে এখনও সারা দেশে বিস্তার লাভ করতে পারেনি সেটি। আগামী দুই থেকে তিন দিনে দেশব্যাপী মৌসুমি বায়ু বিস্তার লাভ করবে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ আফরোজা সুলতানা।

গণমাধ্যমকে তিনি বলেন, ‘বর্তমানে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের মধ্যাঞ্চল পর্যন্ত অগ্রসর হয়েছে এবং দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু দেশের অবশিষ্টাংশে আরও অগ্রসর হওয়ার জন্য পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে, যা আগামী দুই থেকে তিন দিনের মধ্যে সারা দেশে ছড়িয়ে যাবে।’

তিনি আরও জানান, যেহেতু মৌসুমি বায়ু দেশে বিস্তার লাভ করছে, সেহেতু আপাতত তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা কম। তবে যেসব এলাকায় বৃষ্টি হবে না, সেসব এলাকায় মৃদু তাপপ্রবাহ হতে পারে। যেমন- ময়মনসিংহ ও সিলেট বিভাগে তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা কম এবং খুলনা, বরিশাল ও ঢাকা বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় তাপপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।


৩ থেকে ৪ হাজার শ্রমিক মালয়েশিয়া যেতে পারেননি: বায়রা মহাসচিব

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জুন, ২০২৪ ২১:২৯
নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রয়োজনীয় কাগজপত্র থাকা সত্ত্বেও টিকিট না পাওয়ায় তিন থেকে চার হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মী মালয়েশিয়া যেতে পারেননি বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্টারন্যাশনাল রিক্রুটিং এজেন্সিসের (বায়রা) মহাসচিব।

বায়রা মহাসচিব আলী হায়দার চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আজ আমাদের অফিস বন্ধ থাকায় কতজন বাংলাদেশি কর্মী মালয়েশিয়ায় গেছেন এবং কতজন সেখানে যেতে পারেননি তার চূড়ান্ত সংখ্যা আমরা এখনো পাইনি। আমরা আগামীকাল (রোববার) বলতে পারব।’

তিনি বলেন, কুয়ালালামপুরে পৌঁছানোর সময়সীমা গতকাল শেষ হওয়ায় এবং তাদের কাছে উড়োজাহাজের টিকিট না থাকায় প্রায় তিন থেকে চার হাজার বাংলাদেশি অভিবাসী শ্রমিক মালয়েশিয়া যেতে পারেননি।

হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে শ্রমিকদের প্রবেশের সময়সীমা পেরিয়ে যাওয়ায় অনিশ্চয়তার মধ্যে গতকাল মালয়েশিয়াগামী কয়েকশ প্রবাসী শ্রমিক ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেন। স্থানীয় রিক্রুটিং এজেন্টরা সময়মত টিকিট দেওয়া হবে বলে প্রতিশ্রুতি দেওয়ার পর তারা উড়োজাহাজের টিকিট ছাড়াই বিমানবন্দরে আসেন।

গতকাল বিমানবন্দরের দুটি আন্তর্জাতিক টার্মিনালের সামনে ছিল প্রচণ্ড ভিড়। বৃহস্পতিবার রাতে বা তার আগেই অনেক শ্রমিক বিমানবন্দরে চলে আসেন। শ্রমিকদের কেউ কেউ অভিযোগ করেছেন যে, রিক্রুটিং এজেন্টরা তাদের ফোন ধরছেন না। বিমানবন্দরের নির্বাহী পরিচালক কামরুল ইসলাম জানান, ‘মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ শ্রমিকরা চলে যাওয়ায় বিমানবন্দরের পরিস্থিতি এখন শান্ত।’


দেশে চাহিদার তুলনায় ১৭ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন দুধ কম উৎপাদিত হয়

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

দেশে দুধের চাহিদা ১ কোটি ৫৮ লাখ ৫০ হাজার মেট্রিক টন। এর বিপরীতে দুধ উৎপাদন হয় ১ কোটি ৪০ লাখ ৬৮ হাজার মেট্রিক টন। অর্থাৎ, দেশে চাহিদার তুলনায় ১৭ লাখ ৮২ হাজার মেট্রিক টন দুধ কম উৎপাদিত হয়।

শনিবার বিশ্ব দুগ্ধ দিবস উদ্‌যাপন ও ডেইরি আইকন সেলিব্রেশন অনুষ্ঠানে এসব তথ্য জানান প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক।

রাজধানী কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশন বাংলাদেশে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ‌‘প্রাণিসম্পদ ও ডেইরি উন্নয়ন প্রকল্প (এলডিডিপি)’।

অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব ও মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) ডা. মোহাম্মদ রেয়াজুল হক।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর আমরা মাত্র ১০ লাখ মেট্রিক টন দুধ উৎপাদন করতে পারতাম। এখন সঠিক নেতৃত্বের কারণে আমরা ১৪ গুণ বেশি দুধ উৎপাদন করতে পারি। তারপরও আমরা চাহিদার তুলনায় পিছিয়ে আছি।

তিনি আরও বলেন, ইতোমধ্যে আমরা মাংস উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছি এবং ডিম উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়ার পথে রয়েছি; কিন্তু দুধ উৎপাদনে এখনো পর্যাপ্ততার স্তরের পেছনে রয়েছি। এখন আমাদের মূল লক্ষ্য দুধে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করা। তবে শুধু স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনই নয়, একইসঙ্গে আমরা দুধের শুদ্ধতাও বজায় রাখতে চাই।

দুধ পানের এবং দুগ্ধজাত পণ্য খাওয়ার বিভিন্ন উপকারী দিক তুলে ধরে তিনি বলেন, দুধকে বলা হয় আদর্শ খাবার। পৃথিবীতে অনেক পুষ্টিকর খাবার আছে; কিন্তু আদর্শ খাবার এই একটিই। দুধ একমাত্র খাবার যেটা খেয়ে মানবজীবন শুরু হয়। জন্মের পর যখন শিশুকে মায়ের দুধ খাওয়ানো হয়, তখন তার মেধার বিকাশ ঘটে। তবে শুধু শিশু বয়সেই নয়, এ খাবারটি আমাদের সারা জীবন খাওয়া উচিত। সবার উচিত প্রতিদিনে খাবার তালিকায় দুধ রাখা।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী মো. আব্দুর রহমান।

তিনি বলেন, দুধ আমাদের পুষ্টি যোগানের জন্য অপরিহার্য। এটিকে আদর্শ খাদ্য বলা হয়। দুধ খাওয়ার প্রবণতা যেন বাড়ানো যায়, সে জন্য আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। এটি শুধু একটি খাদ্য বা পুষ্টি যোগানের মাধ্যম হিসেবে ভাবলে হবে না। এ খাবারটি খেয়ে যদি একটি জাতি তার পূর্ণাঙ্গ মেধায় বিকশিত হয়, তাহলে নিশ্চয়ই আমরা বলতে পারি এটি একটি অপরিহার্য খাদ্য। আমরা নিজেরা এ খাবার গ্রহণ করব এবং অন্যকেও উৎসাহিত করব।

তিনি আরও বলেন, দেশের মানুষের উন্নয়নের জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপরিহার্য, তেমনি আমাদের পুষ্টি যোগানের জন্য দুধ অপরিহার্য। সুতরাং, এ দুই অপরিহার্য নিয়ে আমরা এ বিশ্ব দুগ্ধ দিবস পালন করছি।

মূল আলোচকের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ বি এম আবদুল্লাহ বলেন, আয়রন ছাড়া দুধের মধ্যে সব ধরনের পুষ্টিগুণ রয়েছে। পুষ্টিগুণের দিক বিবেচনায় দুধের বিকল্প নেই। অনেকের ধারণা উচ্চ রক্তচাপ, হৃদরোগ, ডায়াবেটিসের রোগীদের দুধ খাওয়া উচিত নয়; কিন্তু এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। কোনো ধরনের রোগীরই দুধ খাওয়ায় নিষেধ নেই। বরং দুধ খেলে মানুষের রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। শিশুদের তো দুধ খাওয়া দরকার, তার থেকেও বেশি দুধ খাওয়া দরকার বয়স্কদের। কারণ দুধে ক্যালসিয়াম আছে। যা হাড় গঠন ও ক্ষয়রোধ করে।

এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে আরও উপস্থিত ছিলেন মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব সাঈদ মাহমুদ বেলাল হায়দার, চট্টগ্রাম-৬ আসনের সংসদ সদস্য ও রেলপথ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি এ বি এম ফজলে করিম চৌধুরী। এ ছাড়া আরও উপস্থিত ছিলেন কৃষক লীগের সভাপতি সমীর চন্দ।

অনুষ্ঠানে দেশের দুগ্ধ খাতে অবদানের জন্য চার ক্যাটাগরিতে ৫১ জন সফল খামারি ও উদ্যোক্তাকে সম্মাননা দেওয়া হয়। তৃতীয়বারের মতো আয়োজিত এ পুরস্কারে ডেইরি খামার ক্যাটাগরিতে ২৬ জনকে, পশুখাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্যাটাগরিতে নয়জন, দুধ ও মাংস প্রক্রিয়াকরণ ক্যাটাগরিতে ১১ জন ও খামার যান্ত্রিকীকরণ ক্যাটাগরিতে পাঁচ জনকে পুরস্কার দেওয়া হয়। তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা, ক্রেস্ট ও সনদ দেওয়া হয়।


রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে সমন্বিত প্রচেষ্টা নিন: পররাষ্ট্রমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
কূটনৈতিক প্রতিবেদক

দেশে আশ্রিত প্রায় ১৩ লাখ রোহিঙ্গার নিজ দেশ মিয়ানমারে প্রত্যাবাসন, সে দেশের রাখাইন রাজ্যে চলমান সংঘাত নিরসন ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে জাতিসংঘের সংস্থাগুলো এবং অন্য অংশীদারদের সমন্বিত পদক্ষেপ নিতে জোর আহ্বান জানিয়েছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ।

নিউইয়র্কে স্থানীয় সময় গতকাল শুক্রবার বিকেলে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে সাধারণ পরিষদের সভাপতি, মিয়ানমার বিষয়ে মহাসচিবের বিশেষ দূত, জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার এবং জাতিসংঘের ৬ উন্নয়ন সংস্থার প্রধানদের সঙ্গে পৃথক চার বৈঠকে সরকারি দায়িত্বে যুক্তরাষ্ট্র সফররত পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ আহ্বান জানান।

জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের সভাপতি ডেনিস ফ্রান্সিসকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, ২০১৭ সালে যখন প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গা মিয়ানমারে সহিংসতা থেকে বাঁচতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে, কক্সবাজার ও চট্টগ্রামের মানুষ তাদের মমতা দিয়ে গ্রহণ করেছিল। কিন্তু ক্রমেই রোহিঙ্গারা ক্যাম্প থেকে বেরিয়ে বিভিন্ন স্থানে কর্মসংস্থান করছে আর ক্যাম্পগুলো মানুষ পাচার, মাদক চোরাচালান, জঙ্গিনিয়োগসহ নানা অপরাধের স্বর্গরাজ্যে পরিণত হয়েছে। ফলে স্থানীয়দের জীবন অতিষ্ঠপ্রায়।

জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক হাইকমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডির সঙ্গে বৈঠকে ড. হাছান মাহমুদ বলেন, রোহিঙ্গা উদ্বাস্তুদের পাশাপাশি গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত মিয়ানমার বর্ডার গার্ড পুলিশ ও সেনাবাহিনীর প্রায় ৭৫০ সদস্য বিভিন্ন সময়ে পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে, তাদের বেশির ভাগকেই ফেরত পাঠানো হয়েছে, বাকিরাও ফেরত প্রক্রিয়ায় আছে। শুধু তা-ই নয়, মিয়ানমারে বিবদমান গোষ্ঠীর শেল বাংলাদেশ অংশে পড়ে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে। এসবের পুনরাবৃত্তি রোধ একান্ত প্রয়োজন।

মিয়ানমার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূত অস্ট্রেলিয়ার সাবেক পররাষ্ট্রমন্ত্রী জুলি বিশপের সঙ্গে বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান বলেন, মিয়ানমারে চলমান সংঘাতময় পরিস্থিতি কোনো নতুন ঘটনা নয় এবং এটিকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিপক্ষে ব্যবহারের অজুহাত তৈরির সুযোগ দেওয়া অনুচিত।

এর আগে পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাতিসংঘ সদর দপ্তরে ‘ক্রাইসিস, কনফ্লিক্টস অ্যান্ড ইন্টার-এজেন্সি কোলাবরেশন: নেক্সাস এপ্রোচ’ শীর্ষক অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন। জাতিসংঘের ৬ সংস্থা- ইউএনডিপি, ইউএনএফপিএ, ইউএনওপিএস, ইউএন উইমেন প্রধান এবং ইউনিসেফ ও ডব্লিউএফপি-এর উপপ্রধান এতে অংশ নেন।

মন্ত্রী ড. হাছান বিশেষ করে বিশ্বে সংঘাত প্রভাবিত অঞ্চলগুলোতে জাতিসংঘের সংস্থাগুলোর নেক্সাস বা সম্মিলিত উদ্যোগের সুবিধাগুলো তুলে ধরেন। তিনি রাখাইন ও কক্সবাজারের পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করেন এবং উদ্বাস্তু সংকট নিরসন ও রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর উন্নতির লক্ষ্যে জাতিসংঘের সব সংস্থা, তহবিল এবং কর্মসূচিকে সুসংহতভাবে কাজ করার আহ্বান জানান।

জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মুহাম্মদ এ মুহিত, মন্ত্রণালয় ও মিশনের অন্য সদস্যরা বৈঠকগুলোতে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন।


‘সরকার প্রাথমিক শিক্ষা ও শিক্ষকদের মান উন্নয়নে বহুমুখী উদ্যোগ নিয়েছে’

আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বর্তমান সরকার প্রাথমিক শিক্ষা ও শিক্ষকদের মান আরও উন্নয়নের লক্ষে বহুমুখী উদ্যোগ গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়ার ফলস চার্চে আয়োজিত এক সুধী-সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।

প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ভাইস চ্যাঞ্চেলর ও বঙ্গবন্ধু পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকের সম্মানে ঐ সুধী-সমাবেশের আয়োজন করা হয়।

সভায় প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী বলেন, ‘বর্তমান সরকার সারা দেশে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ ও শিক্ষক নিয়োগের কাজ ইতোমধ্যেই সম্পন্ন করেছে। এখন আমরা শিক্ষা ও শিক্ষকদের মান আরও উন্নয়নের উপর জোর দিয়েছি।’

তিনি বলেন, ‘প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষার্থীদের ঝড়েপড়া রোধকল্পে সরকার স্কুল ফিডিং প্রোগ্রাম চালুর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এলক্ষে একনেক সম্প্রতি ১৬০ উপজেলায় এই কর্মসূচি শুরু করার অনুমোদন দিয়েছে।’

এসময় অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘বর্তমান বাস্তবতায় একমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা আর সম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে বাংলা, ইংরেজী ও মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থার সমন্ময়ে একটি সংযোগ কোর্স চালু করার বিষয়ে চিন্তা করা যেতে পারে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বহু সংস্কৃতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে পরিচিত ও অভিজ্ঞ প্রবাসি বাংলাদেশি শিক্ষক ও অভিভাবকেরা সরকারের দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে তাদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন।’

অনুষ্ঠানে প্রতিমন্ত্রী রুমানা আলী ও ড. আরেফিন সিদ্দিক গ্রেটার ওয়াশিংটন ডিসি এলাকার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে কর্মরত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের বাংলাদেশ ও যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাব দেন।

সাংবাদিক শাহিদ মোবাশ্বের- এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সুধী-সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ভার্জিনিয়া টেক ইউনিভার্সিটির ইলেকট্রিক্যাল ও ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের পরিচালক ও ইন্সটিটিউট অফ ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুর রহমান, ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ ইউনিভার্সিটির এনভায়রনমেন্টাল স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. আরিফ মহিউদ্দিন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক ও বিশ্বব্যাংকের শিক্ষা বিভাগের সিনিয়র কর্মকর্তা ড. সুব্রত ধর, যুক্তরাষ্ট্রের স্বনামধন্য আইনজীবী অ্যাটর্ণী মোহাম্মদ আলমগীর, যুক্তরাষ্ট্রে বাংলাদেশ দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার এজেডএম সাজ্জাদ হোসেন, জর্জ মেসন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. এম আমিনুর রহমান, ম্যারিল্যান্ডের হেল্থ অ্যান্ড হিউম্যান রিসোর্স গবেষণা পরিচালক ড. সাদেক চৌধুরী, ওয়াশিংটন সাব-আরবান সেনেটারি কমিশনের এর প্রকল্প ব্যবস্থাপক ড. মাহবুব প্রামাণিক, বাংলাদেশ সরকারের প্রাক্তন উপসচিব ও বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি সালেহ আহমেদ, বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের যুগ্ম সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র সরকারের মিনিস্ট্রি অব কমার্সের প্রাইমারি প্যাটেন্ট এক্সামিনার জিয়াউল করিম, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোহাম্মদ মকবুল হোসেন, ভার্জিনিয়া ডিপার্টমেন্টে অর টেকনিক্যাল এডুকেশন এর সামিনা নাসরিন, বৃহত্তর ওয়াশিংটন ডিসিস্থ চট্টগ্রাম ইউনিভার্সিটি অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের প্রেসিডেন্ট ও আইটি প্রফেশনাল মাসহাদুল আলম রুপম প্রমুখ।


বাংলাদেশে ৫০ লাখ স্কাউট তৈরির লক্ষ্যমাত্রা পূরণের আহ্বান রাষ্ট্রপতির

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৫০ লাখ স্কাউট তৈরির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সংশ্লিষ্ট সকলকে নিরলস প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন।

আজ শনিবার ‘বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কাউন্সিলের ৫২তম বার্ষিক (ত্রৈবার্ষিক) সাধারণ সভা’ উপলক্ষ্যে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এসব কথা বলেন।

রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বর্তমানে সংগঠনটির সদস্য সংখ্যা ২৫ লাখের অধিক। ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশে ৫০ লাখ স্কাউট তৈরির লক্ষ্যমাত্রা পূরণে স্কাউট আন্দোলনের এই ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। এজন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে নিরলস প্রয়াস চালানোর আহ্বান জানাচ্ছি।’

রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কাউন্সিলের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বাংলাদেশ স্কাউটস ও কাউন্সিলের সকল সদস্যকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান।

তিনি বলেন, ‘স্কাউটিং সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা অনুযায়ী নিয়মিত প্রশিক্ষণ ও ব্যক্তি জীবনে এর প্রতিফলন ঘটিয়ে যুব সম্প্রদায়কে আত্মনির্ভর, সচ্চরিত্রবান ও আদর্শ নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। শিশু, কিশোর ও যুবদের বিভিন্ন অরাজনৈতিক, সেবামূলক ও শিক্ষামূলক কার্যক্রমে অনুপ্রাণিত ও অভ্যস্ত করতে স্কাউট আন্দোলনের গুরুত্ব অপরিসীম। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐকান্তিক আগ্রহে ১৯৭২ সালে দেশে স্কাউটিং যাত্রা শুরু করে।’

রাষ্ট্রপ্রধান বলেন, ‘বাংলাদেশকে ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত সমৃদ্ধ স্মার্ট দেশে পরিণত করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘রূপকল্প ২০৪১’ ঘোষণা করেছেন। এ লক্ষ্য অর্জনে দেশের যুব সম্প্রদায়কে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবিত, দক্ষ ও মানবিক মূল্যবোধসম্পন্ন স্মার্ট নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে হবে। স্কাউট আন্দোলন এক্ষেত্রে ইতিবাচক অবদান রাখতে পারে।’

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই কাউন্সিল সভায় নির্বাচিত নতুন নেতৃত্ব দক্ষতা ও যোগ্যতার সাথে স্কাউটিং আন্দোলনকে এগিয়ে নিবে।
রাষ্ট্রপতি স্কাউটিং এ কৃতিত্বপূর্ণ কাজ ও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় এবছর পদকপ্রাপ্ত স্কাউট সদস্যদের অভিনন্দন জানান। তিনি বাংলাদেশ স্কাউটসের জাতীয় কাউন্সিলের ৫২তম বার্ষিক (ত্রৈবার্ষিক) সাধারণ সভার সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।


‘পাট চাষিদের নিয়ে সমাবেশ করা হবে’

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় আমরা পাট খাতকে পুনরুজ্জীবিত করতে কাজ করে যাচ্ছি। এ বছরের শেষ নাগাদ প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে ঢাকায় পাট চাষিদের নিয়ে সমাবেশ আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে।’

নরসিংদীতে আজ শনিবার শিশু একাডেমি মিলনায়তনে পাট অধিদপ্তর কর্তৃক আয়োজিত পাট খাত-সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের সঙ্গে মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। পাট চাষি, মিল মালিক, ব্যবসায়ী এবং পাট খাত-সংশ্লিষ্ট অংশীজনদের নিয়ে এ সভার আয়োজন করা হয়।

মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পাট ও পাটজাত পণ্যের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন। সরকারের নির্বাচনী ইশতেহারেও গুরুত্ব সহকারে বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। পাটপণ্যে বৈচিত্র্য আনতে এবং পাটশিল্পকে লাভজনক করার উদ্যোগকে উৎসাহিত করা হয়েছে। বর্তমান মন্ত্রিসভার প্রথম সভায় পাট ও পাটজাত পণ্যকে পোশাক শিল্পের ন্যায় গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। এবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বক্তব্যে পোশাক শিল্পের ওপর থেকে নির্ভরশীলতা কাটিয়ে পাট, চামড়া ইত্যাদি শিল্পকে এগিয়ে নিতে নির্দেশনা দিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘দেশের অর্থনীতিতে পাটের হারানো ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার এবং পরিবেশবান্ধব পাটজাত পণ্যের বহুমুখী ব্যবহারের জন্য সর্বাত্মক প্রচেষ্টা গ্রহণ করতে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন অনুশাসন ও দিকনির্দেশনা প্রদান করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর অনুশাসন ও দিকনির্দেশনা অনুযায়ী আমরা কাজ করে যাচ্ছি।’

মন্ত্রী বলেন, ‘পাট বীজ উৎপাদনে আমরা স্বনির্ভর হতে চাই। প্রতিবেশী দেশ থেকে পাটবীজ আমদানি নির্ভরতা কমাতে কাজ করে যাচ্ছি।

পাট-সম্পর্কিত বিষয় নিয়ে স্মৃতিচারণা করে মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমি ছোটবেলায় আমার বাবাকে পাট চাষ করতে দেখেছি। পাটের গন্ধ এখনো আমার মনে পড়ে। আমাদের ছয় ভাই-বোনের পড়াশোনা হয়েছে পাট চাষের টাকায়।’

নরসিংদীর জেলা প্রশাসক ড. বদিউল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন নরসিংদী-১ আসনের এমপি লেফটেন্যান্ট কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম হীরু, নরসিংদী-২ আসনের এমপি এবং বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ডা. আনোয়ারুল আশরাফ খান দিলীপ, সংরক্ষিত মহিলা আসন-৩৫-এর এমপি ফরিদা ইয়াসমিন, বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ, পাট অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জিনাত আরা প্রমুখ।


ঘূর্ণিঝড় রেমাল: সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা বেড়ে ১৩১

ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে সুন্দরবনে মৃত প্রাণীর সংখ্যা আবারও বাড়ল। বনটির বিভিন্ন স্থান থেকে গতকাল শুক্রবার আরও ৩১টি হরিণের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ নিয়ে মোট মৃত প্রাণীর সংখ্যা দাঁড়াল ১৩১টি। গতকাল রাত পর্যন্ত ৯৬টি হরিণ এবং চারটি শূকরসহ মোট ১০০টি মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়।

আজ শনিবার গণমাধ্যমকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন খুলনা অঞ্চলের বন সংরক্ষক মিহির কুমার দো।

তিনি জানান, ঘূর্ণিঝড় রেমালের আঘাতে সুন্দরবনের পূর্ব ও পশ্চিম বন বিভাগের ফরেস্ট স্টেশন অফিস, ক্যাম্প ও ওয়াচ টাওয়ারের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বনের ভেতরে বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য যোগাযোগের মাধ্যম ওয়্যারলেস টাওয়ারও। মিষ্টি পানির পুকুর নিমজ্জিত হয়েছে লবণাক্ত পানিতে।

ঘূর্ণিঝড় রেমালের তাণ্ডবে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ১২৭টি হরিণ এবং চারটি শূকরের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃত হরিণগুলো কটকা অভয়ারণ্য এলাকায় মাটিচাপা দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ভেসে আসা ১৮টি আহত হরিণ ও একটি একটি অজগর সাপ উদ্ধার করা করা হয়, পরে চিকিৎসা দিয়ে বনে অবমুক্ত করা হয়।

মিহির কুমার দো আরও বলেন, ‘ঘূর্ণিঝড় রেমালের প্রভাবে দফায় দফায় উচ্চ জোয়ারে সুন্দরবনের সব নদী-খাল উপচে বনের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে পড়ে। জোয়ারের পানি সুন্দরবনের গহীনে উঠে যাওয়ায় হরিণগুলো সাঁতরে কূলে উঠতে না পেরে মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বনের অবকাঠামো বিধ্বস্ত হয়ে যাওয়াসহ অন্যান্য ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক পরিমাণ ছয় কোটি ২৭ লাখ টাকার বেশি হবে।’

বিষয়:

ঈদ যাত্রায় ট্রেনে ভোগান্তি হবে না: রেলমন্ত্রী

ছবি: সংগৃহীত
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
নিজস্ব প্রতিবেদক

আসন্ন ঈদুল আজহায় ট্রেনে চলাচলকারীদের কোনো ভোগান্তি পোহাতে হবে না বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন রেলমন্ত্রী জিল্লুল হাকিম।

আজ শনিবার রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলায় ‘কৃষিমেলা’ উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

রেলমন্ত্রী বলেন, ‘মানুষের দোয়া ও আপনাদের সহযোগিতায় এবারের ঈদ যাত্রায় আমরা সফল হবো। চেষ্টা করছি ভোগান্তি ছাড়া এবারের ঈদেও মানুষ ঘরে ফিরবে।’

জিল্লুল হাকিম বলেন, ‘ট্রেন বন্ধ রেখে বাস মালিকদের সুবিধা দেব—এটা বিকৃত মানসিকতার পরিচয়। রেলকে ব‍্যবহার করে কেউ সুবিধা নেবে এটা হতে দিতে আমরা রাজি না।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাঝেমাঝে ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে দু-একটি ট্রেন বন্ধ রাখা হয়। বতর্মানে রেল সম্প্রসারণ হচ্ছে, রেলের নতুন নতুন বগি আসছে। আমরা এরই মধ্যে ভারত থেকে ২০০ বগির জন‍্য চুক্তি সম্পাদন করেছি। এ ছাড়া দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আরও ২৬০টি বগি আসবে। এর চুক্তিও খুব তাড়াতাড়ি সম্পাদন হবে।’

এদিকে আগামীকাল রোববার থেকে পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে ট্রেনের অগ্রিম টিকেট বিক্রি শুরু হবে। টিকেটগুলো পাওয়া যাবে অনলাইনে। ঈদের আগে আন্তঃনগর ট্রেনের ১২ জুনের আসন বিক্রি হবে ২ জুন; ১৩ জুনের আসন বিক্রি হবে ৩ জুন; ১৪ জুনের আসন বিক্রি হবে ৪ জুন; ১৫ জুনের আসন বিক্রি হবে ৫ জুন; ১৬ জুনের আসন বিক্রি হবে ৬ জুন।


‘শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষম মানবসম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে’

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু। ফাইল ছবি
আপডেটেড ১ জানুয়ারি, ১৯৭০ ০৬:০০
বাসস

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মো. শামসুল হক টুকু (এমপি) বলেছেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ে তুলতে হলে বর্তমান প্রজন্মের শিক্ষার্থীদের জ্ঞান-গুণে সমৃদ্ধ হতে হবে।’

আজ শনিবার সাঁথিয়ায় এসএসসি, দাখিল ও এসএসসি (ভোকেশনাল) পরীক্ষা-২০২৪’র কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন।

ডেপুটি স্পিকার বলেন, ‘তাদের হাত ধরেই বাংলাদেশ স্মার্ট ও উন্নত বিশ্বের কাতারে নাম লেখাবে। ডিজিটাল বাংলাদেশের সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে শিক্ষার্থীদের কর্মক্ষম মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে তুলতে হবে।’

এসময় এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের হাতে সম্মাননা তুলে দেন শামসুল হক টুকু।

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু কুদরত-ই খুদা কমিশন গঠনের মাধ্যমে শিক্ষিত জাতি গড়ার বীজ বপন করে গিয়েছিলেন। তিনি সবসময় কর্মক্ষম মানব সম্পদ তৈরির কথা ভাবতেন। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বাস্তবায়নের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শিক্ষাকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে বছরের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের বিনামূল্য বই, বৃত্তি ও উপবৃত্তি প্রদান করছেন। দরিদ্র পরিবারকে নানা প্রকারের ভাতা প্রদান করে শিক্ষার্থীদের বিদ্যালয়মুখী হওয়ার পথ সুগম করে দিয়েছেন। নির্বাচিত প্রতিনিধি ও শিক্ষা অফিসাররা স্মার্ট হলে স্মার্ট নাগরিক গড়ে তোলা সহজ হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বর্তমান সরকারের বাইরে যারা ক্ষমতায় ছিল তারা শিক্ষা ব্যবস্থাকে ধ্বংস করেছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশে এখন শিক্ষার চমৎকার পরিবেশ তৈরি হয়েছে। বিদ্যালয়ে এখন নতুন ভবন, আধুনিক শিক্ষা সরঞ্জাম এবং দক্ষ শিক্ষক রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের মাদক থেকে দূরে থেকে সাংস্কৃতিক চর্চার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ করে কর্মক্ষম মানব সম্পদ হিসেবে গড়ে উঠতে হবে। সামাজিক ও ধর্মীয় অবক্ষয় রোধে মাদকমুক্ত শিক্ষাঙ্গন গড়ে তোলা অত্যন্ত জরুরি।’

সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.জাহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে উপজেলা চেয়ারম্যান মো. সোহেল রানা খোকনসহ গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ও গণমাধ্যমকর্মীরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

বিষয়:

‘আনার হত্যায় জড়িতদের দেশে ফেরাতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে শনিবার ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। ছবি: দৈনিক বাংলা
আপডেটেড ১ জুন, ২০২৪ ১৭:০৭
ঢাবি প্রতিনিধি

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যায় জড়িত সবার বিচার হবে জানিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল শনিবার বলেছেন, নেপাল থেকে একজনকে দেশে ফিরিয়ে আনতে সব ধরনের ব্যবস্থা নেবে সরকার।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রে (টিএসসি) ছাত্রলীগের এক অনুষ্ঠান শেষে প্রশ্নের জবাবে সাংবাদিকদের কাছে এ কথা বলেন তিনি।

ভারতে খুন হওয়া এমপি আনার হত্যার তদন্তের অংশ হিসেবে সকালে নেপালে যান ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) প্রধান হারুন অর রশীদসহ চারজন।

নেপালে যাওয়ার আগে হারুন সাংবাদিকদের জানান, এমপি আনার হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শাহীনের সহকারী সিয়াম নেপালে আটক হয়েছেন বলে তারা শুনেছেন। ওই হত্যার পর অন্য আসামিদেরও নেপাল যাওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ কারণে চার সদস্যের দল যাচ্ছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশটিতে।

এমন পরিস্থিতিতে এমপি আনার হত্যায় জড়িত বিদেশে অবস্থানরত অপরাধীদের গ্রেপ্তারের বিষয়ে এক প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের মাননীয় সংসদ সদস্যের হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়েছে ভারতে। সুতরাং হত্যাকাণ্ড অনুযায়ী মূল যে মামলা, এটি ভারতেই হয়েছে। ভারতের সাথে যুক্তরাষ্ট্রের বন্দি বিনিময় চুক্তি রয়েছে।

‘যেহেতু ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে, তাই ভারত সরকারই যুক্তরাষ্ট্রের কাছে এই আবেদন করবেন। আমাদের দেশে হলে আমরা আবেদন করতাম।’

এমপি আনার চিকিৎসার জন্য গত ১২ মে কলকাতায় যান এবং ১৪ মে থেকে তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না।

স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ২২ মে বলেন, কলকাতার অদূরে নিউ টাউনের একটি ফ্ল্যাটে তাকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে।

এমপি আনারের মৃত্যুর ঘটনায় ২২ মে একটি মামলা করা করা হয়।

আসাদুজ্জামান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীসহ আমরা সবাই এটা নিয়ে উদ্বিগ্ন। আমরা সবাই চাচ্ছি যে যেখানে আছে, তাদের ধরতে।

‘একজন মাননীয় সংসদ সদস্যকে এভাবে নৃশংসভাবে হত্যা করবে, আর আমরা বসে থাকব, সেটি তো হতে পারে না।’

আনার হত্যায় জড়িত সবার বিচার হবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘যারা এই হত্যাকাণ্ডের সাথে কোনো না কোনোভাবে যুক্ত, আইন অনুযায়ী তাদের সবার বিচার হবে। নেপালে যিনি আছেন, তাকে ফিরিয়ে আনার জন্য যত ধরনের ব্যবস্থা প্রয়োজন, আমরা নেব।’


banner close